Shopping Cart
৳ 0.00

No products in the cart.

আহ্বান: ড. মিজানুর রহমান আজহারি

হেলদি লাইফস্টাইল

সুস্থতা দুনিয়ার জীবনে সবচেয়ে বড়ো নিয়ামতগুলোর একটি। সুস্থ দেহ ও সুন্দর মন জীবনে আনে ছন্দ, গতি আর প্রশান্তি। অন্যদিকে অসুস্থতা মানুষের সমস্ত অর্থবিত্ত, ক্ষমতা ও প্রতিপত্তিকে ম্লান করে দেয়। এজন্যই ইসলাম সুস্থতাকে অত্যধিক গুরুত্ব দিয়েছে। রাসূল বলেন-

‘আল্লাহর নিকট একজন সুস্থ-সবল মুমিন দুর্বল মুমিন অপেক্ষা অধিকতর প্রিয় ও উত্তম।’ (মুসলিম : ৬৯৪৫)

একজন সুস্থ-সবল মুমিন যথাযথ হকের সাথে আল্লাহর ইবাদত পালনে অধিক সমর্থ হন। পাশাপাশি মানুষের কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারেন, পারেন অন্যের সাহায্যে পাশে দাঁড়াতে। প্রয়োজনে কঠিন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতেও পিছপা হন না তিনি। তাই আল্লাহর প্রিয়ভাজন হওয়ার জন্য হলেও নিজের সুস্থতা ও ফিটনেস সম্পর্কে মুমিনের সচেতন হওয়া একান্ত কর্তব্য। তা ছাড়া নিজের সুস্থতা ও ফিটনেসের প্রতি যত্নবান হওয়া মুমিনদের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যও বটে। সকল নবি-রাসূলই সুস্বাস্থ্যের প্রতি ছিলেন যত্নবান। প্রত্যেকেই ছিলেন কঠোর পরিশ্রমী কর্মবীর। রাসূলুল্লাহ নিজেও অত্যন্ত কর্মঠ ও সক্রিয় জীবন নির্বাহ করেছেন।

রাসূলুল্লাহ্ মরুভূমিতে মেষ চড়াতেন, ব্যাবসা-বাণিজ্য করতেন দূর- দূরান্তে। নবুয়তের পূর্বে নিভৃতে ধ্যান করার উদ্দেশ্যে হাইকিং করে উঠেছেন ৬৩৪ মিটার উঁচু জাবালে নুর পর্বতের গুহায়। বাস্তব জীবনে উট, গাধা, ঘোড়া ইত্যাদি বাহনে চড়েছেন। নিজেই যুদ্ধপরিচালনা করেছেন, সরাসরি অংশগ্রহণ করেছেন জিহাদের ময়দানে । এ ছাড়া তিনি প্রায়ই মদিনার বাজার পরিদর্শনে যেতেন, অসুস্থদের দেখতে যেতেন, নিয়মিত মদিনা থেকে হেঁটে হেঁটে চলে যেতেন কুবা পর্যন্ত। ছাগলের দুধ দোহন থেকে শুরু করে নিজের জুতা-জামা সেলাই পর্যন্ত যাবতীয় সাংসারিক কাজে তিনি সাগ্রহে অংশ নিতেন। সর্বোপরি একটি কর্মচঞ্চল, গতিশীল ও ভারসাম্যপূর্ণ জীবনযাপন করেছেন বিশ্বনবি মুহাম্মাদ ।

সুস্থতা একদিনে অর্জিত হয় না। এটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তিলে তিলে অর্জিত হওয়ার বিষয়। এর জন্য চাই পরিকল্পিত উপায়ে নিয়মিত শরীর, মন ও আত্মার পরিচর্যা এবং নিয়মমাফিক জীবনযাপন। কিন্তু মানুষমাত্রই নিয়মের প্রতি উদাসীন। তারা যাচ্ছেতাই চলতেই অধিক পছন্দ করে। এ কারণে অজান্তেই মানুষ ধীরে ধীরে নিজের সুস্থতাকে দুর্ভেদ্য খাঁচায় বন্দি করে ফেলে। পরে যখন অসুস্থতা তার সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে যায়, তখন বুঝতে পারে—কী নিয়ামতকে এতদিন উপেক্ষা করেছে তারা। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, প্রিয়নবি ইরশাদ করেছেন—

‘অধিকাংশ মানুষ আল্লাহ তায়ালার দুটি বিশেষ নিয়ামতের প্রতি উদাসীন। একটি স্বাস্থ্য, অপরটি তার অবসর।’ (বুখারি : ৬৪১২) রাসূলুল্লাহ সুস্থতার জন্য একই সঙ্গে শরীর ও আত্মাকেও সমান গুরুত্ব দিতেন। এ দুইয়ের মাঝে সমন্বয়ের জন্য তিনি অনুসরণ করতেন নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম ও পদ্ধতি। পরিমিত ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ, নিয়মিত ঘুম, শারীরিক শ্রম, বিনোদন, পরিবার ও আত্মীয়দের সময় দান, ইবাদত, জিকির, রোজা, দীর্ঘক্ষণ নামাজে মগ্ন থাকা ইত্যাদি ছিল তাঁর সুস্থ ও সাবলীল জীবনের প্রধান নিয়ামক। মনুষ্য বৈশিষ্ট্যানুযায়ী কখনো অসুস্থ হলে তিনি যথাযথ চিকিৎসা গ্রহণ করতে কখনোই দ্বিধা করতেন না । বলতেন—

‘হে আল্লাহর বান্দারা! তোমরা চিকিৎসা গ্রহণ করো। কেননা, মহান আল্লাহ এমন কোনো রোগ সৃষ্টি করেননি, যার প্রতিষেধক তিনি দেননি। তবে একটি রোগ আছে, যার কোনো প্রতিষেধক নেই। আর তা হলো—বার্ধক্য।’ (ইবনে মাজাহ : ৩৪৩৬)

এবারে রাসূল -এর সুস্বাস্থ্যের কয়েকটি চাবিকাঠি একটু জেনে নেওয়া যাক—

Home Shop Cart Account